#তিনি ছিলেন ওসমানীনগরবাসী একজন নিভৃতচারী কর্মবীর; দীনি প্রতিষ্ঠানের একনিষ্ঠ খাদেম। উনার কত শত পরিকল্পনা ছিল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য, বিশেষ করে উনার কর্মস্থলের এবং নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানটির জন্য। নমনীয় কোমল আচরণের অনন্য, অসাধারণ এই মানুষটি কে দেখলে কেন যেন মনে হত খুবই ব্যতিক্রম। ভাব গাম্ভীর্য যেন “অলি” কাতারের একজন। সর্বশেষ, রমযানের আগে এসেছিলেন আমার অফিসে জায়ফরপুরস্থ নিজ প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক সভার দাওয়াত নিয়ে। এসেছিলেন কয়েক মিনিটের জন্য, কিন্তু উনার একঘণ্টা সময় নষ্ট করেছিলাম, নানা কিছু জানার অজুহাতে! কে জানত এত তাড়াহুড়ো করে তিনি চলে যাবেন, না হয় হয়ত সময় নষ্ট করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে নিতাম। অনেক পরিকল্পনার সাক্ষী করে গেলেন, কিছু লিখিত, কিছু মৌখিক।
মান্যবর এই মানুষটি আজ ১৯ মে ২০২১ ইংরেজি তারিখে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অগস্ত্য যাত্রা করলেন। উনার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। কর্ম উদ্যমী এই মহান ব্যক্তি সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই; তিনি আপন কর্মে মহীয়ান। ২০১৫ সালে উনি দু’টি লিখিত বক্তব্যের কপি আমাকে দিয়েছিলেন, একটি উনার নিজের পরিচিতি এবং অপরটি উনার কর্মস্থলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। হয়ত অনেক কিছু ইতিমধ্যে তিনি বাস্তবায়ন করে গেছেন, যে কাজ গুলো বাকী রয়েছে সেগুলো নিশ্চয় অসম্পূর্ণ রাখবে না উত্তরসূরিরা। মহান মালিক যেন তার প্রত্যেকটি নেক ইচ্ছা পূর্ণ করে দেন। উনার লিখিত বক্তব্যটি স্মৃতি হিসাবে রেখে দিলাম এখানে।
#অধ্যক্ষের পরিচিতি
মুহাঃ আমিরুল ইসলাম, পিতা: মুহাঃ রফাত উল্লাহ, মাতা: মোছা: সিতারা বেগম, জন্ম তারিখ: ০৩/০৭/১৯৭২ইং, স্থায়ী ঠিকানা: গ্রাম-জায়ফরপুর, ডাকঘর-গোয়ালা বাজার, থানা-ওসমানীনগর, উপজেলা-বালাগঞ্জ, বর্তমান ঠিকানা: ওসমানীনগর, জেলা: সিলেট, বাংলাদেশ। জন্মস্থান- সিলেট, জাতীয়তা: বাংলাদেশী, ধর্ম-ইসলাম, বর্ণ-সুন্নি।
লেখাপড়া: প্রথমে গ্রামের মক্তবে, এরপর ১৯৭৬ সনে ব্রাক্ষণ গ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১ম শ্রেণী উত্তীর্ণ, ১৯৮০সনে জায়ফরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হইতে ৫ম শ্রেণী উত্তীর্ণ হন। ১৯৮১ সালে হযরত শাহজালাল দাখিল মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ১৯৮৮ সালে দাখিল ১ম ব্যাচে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরে ইছামতি দারুল উলুম সিনিয়র মাদরাসা থেকে ১৯৯০ সালে ২য় বিভাগে আলিম উত্তীর্ণ হন । পরবর্তীতে সৎপুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসা থেকে ১৯৯২ সালে ফাজিল ৩০০ মার্কের ইংরেজি সহ ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৯৪ সালে ১ম বিভাগে মোতাজুল মুহাদ্দিসিন সনদ লাভ করেন।
সনদে কেরাত: ১৯৮৮ সালে দারুল কেরাত মজিদিয়া ফুলতলা ট্রাষ্ট এর অধীনে সনদে কেরাত লাভ করেন।
সনদে হাদিস ও সনদে তরীকতঃ উপমহাদেশের প্রধান মুহাদ্দিস, মুফাস্সির ও পীরে কামিল আল্লামা সাহেব কিবলার নিকট থেকে সনদে কেরাত, সনদে হাদিস ও সনদে তরীকত লাভ করেন। এছাড়া সৎপুর মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস হযরত মাও আবুবকর মোঃ ইসমাইল মাত্রাবী ও আরব আমিরাতের সাবেক প্রধান বিচারপতি সৎপুর ও ইছামতি মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ আল্লামা হাবিবুর রহমান সাহেবের কাছ থেকে সনদে হাদিস গ্রহণ করেন।
১৯৮৯ থেকে পবিত্র রমাদান মাসে সহকারী কারী হিসাবে দায়িত্ব পালন শুরু। হযরত শাহজালাল (রহঃ) ফাজিল মাদ্রাসায় ১৯৯৪ থেকে নাযিম ও প্রধান ক্বারি অত্র শাখার।
সহকারী মৌলভী পদে চকবাজার ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় ০২/০৭/১৯৯৪ থেকে ৩১/০৫/১৯৯৫ইং পর্যন্ত ইনডেক্স ৩১২৪২৪।
ইছামতি কামিল মাদ্রাসা জকিগঞ্জে, সহকারী মৌলভী ও পরে প্রধান মুহাদ্দিস পদে নিয়োগ লাভ ৩১/০৫/১৯৯৫ থেকে ১৩/০৮/২০০১ পর্যন্ত।
পরে অধ্যক্ষ চান্দাইরপাড়া সুন্নিয়া আলিম মাদ্রাসা, বালাগঞ্জ, ১৪/০৮/২০০১ থেকে ০৮/০৯/২০০৯ পর্যন্ত।
অধ্যক্ষ পদে হযরত শাহজালাল (রহঃ) ফাজিল মাদ্রাসায় ১৯/১১/২০০৯ থেকে অদ্যাবধি।
লেখকঃ সুহেল আহমদ চৌধুরী, পরিচালক-মান্না আইটি ইন্সটিটিউট ।
0 মন্তব্যসমূহ